কম্পিউটার পেরিফেরালস

এইচএসসি (বিএমটি) ভোকেশনাল - কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন-১ - | NCTB BOOK

কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য কম্পিউটারের বিভিন্ন ডিভাইস বা হার্ডওয়্যারসমূহ সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে। এ ধরনের হার্ডওয়্যারসমূহের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস। ইনপুট ডিভাইসসমূহ কম্পিউটারের প্রক্রিয়াকরণের কার্যাদি সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডেটা সরবরাহ করে। পক্ষান্তরে আউটপুট ডিভাইসসমূহ কম্পিউটারের প্রক্রিয়াকরণের ফলাফল প্রদর্শনের বা প্রদানের কাজে নিয়োজিত থাকে।

কম্পিউটার পেরিফেরালস (Computer Peripharals)

Peripharal শব্দের শাব্দিক অর্থ হলো সীমান্তবর্তী বা প্রান্তিক। পেরিফেরাল ডিভাইসসমূহ কম্পিউটারের সিপিইউ-এর সীমান্তবর্তী ( নিকটতম) স্থানে অবস্থান করে নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান এবং তথ্য সংরক্ষণ করে থাকে। মাইক্রোপ্রসেসর এককভাবে কোনো কাজ সম্পাদন করতে পারে না। মাইক্রোপ্রসেসরের কাজে সহায়তা প্রদানের জন্য কিছুসংখ্যক ইনপুট-আউটপুট ডিভাইসের প্রয়োজন হয়। পেরিফেরাল বলতে মূলত কম্পিউটারের সিপিইউ-এর সাথে সংযুক্ত যাবতীয় ইনপুট/আউটপুট ডিভাইসসমূহকে বোঝায় ।

কম্পিউটারের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সিপিইউএর সাথে ফিজিক্যালি (Physically) বা লজিক্যালি ( Logically) সংযুক্ত যাবতীয় ইনপুট আউটপুট ও স্টোরেজ ডিভাইসকে কম্পিউটার পেরিফেরালস বলে।

Content added By

কম্পিউটার পেরিফেরালসের শ্রেণিবিভাগ

কম্পিউটারের সঙ্গে সংযুক্ত ইনপুট/আউটপুট ডিভাইসগুলোকে কম্পিউটার পেরিফেরালস বলে। যেমন— কীবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার, স্ক্যানার, প্লটার, ওসিআর, ওএমআর ইত্যাদি। তথ্যপ্রবাহের দিক বিবেচনা করে কম্পিউটার পেরিফেরালকে সাধারণত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১. ইনপুট পেরিফেরাল ( Input Peripheral )

২. আউটপুট পেরিফেরাল (Output Peripheral) এবং

৩. স্টোরেজ / ইনপুট ও আউটপুট পেরিফেরাল (Storage / Input and Output Peripheral )

১. ইনপুট পেরিফেরাল (Input Peripheral)

কম্পিউটার বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যারের বা ডিভাইসের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের ডেটা গ্রহণ করে। কম্পিউটারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণের কাজে ডেটা প্রদানে নিয়োজিত হার্ডওয়্যারসমূহই হলো ইনপুট পেরিফেয়াল। কম্পিউটার সিস্টেমে বিভিন্ন ধরনের ইনপুট পেরিফেয়াল ব্যবহৃত হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইনপুট পেরিফেয়ালসমূহ হলো-

১। কী-বোর্ড

২। মাউস

৩। বার কোড রিডার

৪। পয়েন্ট অফ সেল

৫। ট্র্যাকবল

৬। ওএমআর

৭। জয়স্টিক

৮। টাচস্ক্রিন

৯। ওসিআর

১০। স্ক্যানার

১১। ডিজিটাইজার

১২ । লাইটপেন

১৩। গ্রাফিক্স প্যাড

১৪। ডিজিটাল ক্যামেরা ইত্যাদি।

২. আউটপুট পেরিফেরাল (Output Peripheral)

কম্পিউটারের ফলাফল প্রদর্শনের কাজে বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যার সংযুক্ত থাকে। এ সকল হার্ডওয়্যার আউটপুট পেরিফেয়াল নামে পরিচিত। অর্থাৎ কম্পিউটারের ইনপুট হার্ডওয়্যারসমূহের মাধ্যমে প্রাপ্ত ডেটাসমূহ প্রক্রিয়াকরণ অংশে প্রক্রিয়াজাত হয়ে যে সকল হার্ডওয়্যারের সাহায্যে ফলাফল প্রদর্শন করে সেগুলোকে আউটপুট পেরিফেয়াল বলা হয়। উল্লেখযোগ্য আউটপুট পেরিফেয়ালসমূহ নিম্নরূপ—

১। মনিটর

২। স্পিকার

৩। ফিল্ম রেকর্ডার

৪। প্রিন্টার

৫। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর

৬। হেডফোন ইত্যাদি।

৭। পুটার

৮। ইমেজ সেটার

৯। ডিজিটাইজার

১০ । লাইটপেন

১১। গ্রাফিক্স প্যাড

১২। ডিজিটাল ক্যামেরা ইত্যাদি।

৩. স্টোরেজ/ ইনপুট ও আউটপুট পেরিফেরাল (Storage / Input and Output Peripheral) কম্পিউটারের সঙ্গে সংযুক্ত যে সকল ডিভাইসগুলো ইনপুট ও আউটপুট যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয় তাদেরকে ইনপুট ও আউটপুট পেরিফেরাল বলা হয়। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ইনপুট ও আউটপুট পেরিফেরাল হচ্ছে—

১। হার্ডডিস্ক

৩। পেনড্রাইভ

২। সিডি বা ডিভিডি

৪। টাচস্ক্রিন ইত্যাদি।

Content added || updated By

সাধারণ পেরিফেরালস ডিভাইসসমূহের কার্যাবলি

কীবোর্ড (Keyboard)

Input Device এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপক ব্যবহৃত ডিভাইস হচ্ছে Keyboard। কোনো লেখার কাজে এটি ছাড়া কম্পিউটারে তথ্য প্রবেশ করা প্রায় অসম্ভব। Keyboard প্রধানত দুই ধরনের। যেমন — Standard Keyboard ( 84 keys) এবং Enhanced keyboard (101 / 102 / 104 keys ) ।

চিত্র : বিভিন্ন প্রকার Keyboard

Keyboard এর পোর্ট মোট তিন প্রকার। যথা : PS/2 Port, USB Port এবং Serial Port।

মাউস (Mouse)

Mouse হচ্ছে কী-বোর্ডের পাশাপাশি আরেকটি বহুল ব্যবহৃত ইনপুট ডিভাইস। মাউস দিয়ে কী-বোর্ডের চেয়ে অনেক দ্রুত কাজ করা যায়। মাউস দুই ধরনের হয়। যেমন—

মেকানিক্যাল (Mechanical) মাউস: মাউসের নিচের দিকে একটি বল থাকে; এজন্য মাউস মুভ করলে ডেস্কটপে কার্সরও উপর/নিচ/ডান/বাম মুভ করে।

অপটিক্যাল (Optical) মাউস: মাউসের নিচের দিকে বলের পরিবর্তে একটি Ray দ্বারা মুভ হয়। এই

মাউস ক্যাবলসহ হতে পারে, আবার তারবিহীনও (Wireless) হতে পারে।

প্রিন্টার (Printer)

প্রিন্টার হচ্ছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আউটপুট ডিভাইস। সাধারণত প্রিন্ট বা হার্ডকপি নেওয়ার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। সাধারণত তিন ধরনের প্রিন্টার ব্যবহৃত হয়। যথা-

Dot matrix,

Inkjet Bubble jet Laser Jet

মনিটর (Monitor)

মনিটর একটি গুরুত্বপূর্ণ আউটপুট ডিভাইস। এটি হচ্ছে তথ্য প্রদর্শনের একটি মাধ্যম যা ভিডিও কন্ট্রোলার কার্ড বা এডাপ্টার থেকে প্রাপ্ত সংকেতকে যথাযথ রূপান্তরের পর নিজস্ব স্ক্রীন বা পর্দায় দেখায় ।

Content added || updated By

বিভিন্ন ধরনের প্রিন্টারের বৈশিষ্ট্য

বাজারে বিভিন্ন ধরনের প্রিন্টার রয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত প্রিন্টারের গুলোর বৈশিষ্ট্য নিচে তুলে ধরা হলো-

ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টার (Dot matrix Printer)

এটি একটি ধাক্কা প্রিন্টার । বিভিন্ন ডট প্যাটার্নের সাহায্যে ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টারসমূহ তাদের কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে। অর্থাৎ অনেকগুলো ডট সমন্বিত হয়েই ক্যারেক্টার গঠিত হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে ব্যবহৃত অনেক গতি সম্পন্ন এবং উচ্চগুণ সম্পন্ন ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টার বাজারে পাওয়া যায়। যেমন-৯ পিন, ২৪ পিন ইত্যাদি। প্রিন্ট হেডকে বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে নড়াছড়া করার ব্যবস্থা আছে। একটি বর্ণ ছাপা হওয়ার পর প্রিন্টহেড একটু সরে যায় ফলে একই লাইনের পরের বর্ণ ছাপা হয়। একটি পুরো লাইন ছাপা হয়ে গেলে কাগজ একটু সরে গিয়ে পরের লাইন চলে আসে আর প্রিন্টহেডও সেই সঙ্গে বাঁদিকের শেষ প্রান্তে সরে গিয়ে আবার ছাপাতে শুরু করে। তবে কিছু ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টার উভয়মুখী (Bidirectional) অর্থাৎ, এগুলো বাঁম দিক থেকে ডান ও ডান থেকে বামদিক উভয় দিকেই ছাপাতে পারে। এক্ষেত্রে একটি লাইন বামদিক থেকে ও পরের লাইন ডানদিক থেকে, এভাবে ছাপা হয়। এতে ছাপা অপেক্ষাকৃত দ্রুততর হয়। ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টারে সেকেন্ডে ৫০ থেকে ৫০০টি বর্ণ ছাপা যায়। এর একটি সুবিধা হলো ডট ম্যাট্রিক্স সারি ও স্তম্বের সংখ্যা পরিবর্তিত করে বর্ণের সাইজ বা গড়ন পাল্টানো যায়।

ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টারে লেখা ছাড়াও ছবি বা গ্রাফ ছাপানো যায়। এ ধরনের প্রিন্টারে বর্ণগুলো কতিপয় বিন্দু দ্বারা ছাপা হওয়ায় লেখা সুদৃশ্য হয় না। তবে অধিক পিন সংবলিত ডট ম্যাট্রিক্স ব্যবহার করলে লেখা প্ৰায় সাধারণত ছাপার লেখার মতোই হয়। যে ধরনের প্রিন্টারে ভালো ছাপার অক্ষরের মতো লেখা হয় তাদের লেটার কোয়ালিটি (Letter quality) প্রিন্টার বলে। বর্ণগুলো বিচ্ছিন্ন বিন্দু না এঁকে অবিচ্ছিন্ন রেখা দ্বারা আঁকলে তবেই লেটার কোয়ালিটি ছাপানো সম্ভব।

চিত্র : ৫ x ৭ মেট্রিক্স ও ৫ বার ধাক্কা দিয়ে ইংরেজী 7 লেখার প্রক্রিয়া

ডট মেট্রিক্স প্রিন্টারের বৈশিষ্ট্যসমূহ

১. এ ধরনের প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্ট করার ক্ষেত্রে প্রতিটি ক্যারেক্টারকে জেনারেট করতে ডট ব্যবহার করা হয়।

২. এত সাধারণত ৭, ৯ অথবা ২৪ পিন থাকে।

৩. এত ব্যবহৃত প্রচলিত ডট ম্যাট্রিক্সগুলো হচ্ছে ৭×৫, ৯×৭, ১২×৯, ২৪×৯, ৪০×১৮ ইত্যাদি।

৪. প্রতি সেকেন্ডে ৫০-৫০০ টি ক্যারেক্টার ছাপানো যায়।

৫. ডট-মেট্রিক্সের সারি ও কলাম সংখ্যা পরিবর্তন করে বর্ণের সাইজ বা গঠন পাল্টানো যায় । 

৬. এর গতি অন্যান্য প্রিন্টারের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম।

৭. প্রিন্ট কোয়ালিটি তেমন ভালো নয়।

৮. প্রিন্টিংয়ের সময় শব্দ হয়।

৯. প্রিন্টিং খরচ কম।

১০. কিছু কিছু ডট-মেট্রিক্স প্রিন্টার উভয়মুখী অর্থাৎ উভয় দিক হতেই প্রিন্ট করতে পারে।

ইঙ্কজেট প্রিন্টার (Ink Jet Printer): যে প্রিন্টার কালি ছড়িয়ে বা স্প্রে করে কম্পিউটারের ফলাফল প্রিন্ট করে থাকে তাকে ইঙ্কজেট প্রিন্টার বলে। এই প্রিন্টারে তরল কালি ব্যবহৃত হয়। তাপের দ্বারা এ চার্জযুক্ত কালি ক্ষুদ্রাকৃতি নজেল দিয়ে পরিমিতভাবে কাগজের উপর নিক্ষেপিত হয়। এ প্রিন্টার ইদানিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ সাদা-কালো বা রঙিন উভয় প্রকার ছবি মুদ্রণ করা যায়। তবে এর কালির কার্টিজের দাম বেশি বলে, গড়পড়তা পৃষ্ঠা প্রতি খরচ বেশি পড়ে। প্রিন্টিং প্রেসে রঙিন ছবি ছাপার আগে, প্রুফ শিটে রঙিন ছবির মান যাচাই করার জন্য এই প্রিন্টার ব্যবহার করা হয়। বন্ধু-বান্ধবদের রঙিন কার্ড, ছবি তৈরির জন্যও ইঙ্কজেট প্রিন্টার ব্যবহার করা হয়।

ইঙ্কজেট প্রিন্টারের বৈশিষ্ট্য

১. ইঙ্কজেট প্রিন্টারের গতি ১-২০ পিপিএম হয়ে থাকে।

২. প্রিন্টারের সাহায্যে সম্পাদিত লেখাসমূহ কাগজে কী আকৃতিতে উপস্থিত হয়, তা প্রিন্ট কোয়ালিটির মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। ইঙ্কজেট প্রিন্টারের প্রিন্ট কোয়ালিটি তুলনামূলক ভালো।

৩. ইঙ্কজেট প্রিন্টারের দুই ধরনের কার্টিজ থাকে। যথা- ব্লাক কার্টিজ এবং কালার কার্টিজ।

৪. ফ্রন্ট প্যানেল থেকে এবং প্রিন্টিং সফটওয়্যার দ্বারা প্রিন্ট মোড সেট করা যায়।

৫. এটি পেপার সাইজ শনাক্ত করতে পারে এবং প্রিন্টিং মোড সেট করার ক্ষমতা রাখে।

৬. ইঙ্কজেট প্রিন্টারের দাম লেজার প্রিন্টারের চেয়ে কম কিন্তু প্রিন্টিং খরচ লেজার প্রিন্টারের চেয়ে বেশি।

লেজার প্রিন্টার

লেজার রশ্মি ব্যবহার করে কাগজে লেখা ফুটিয়ে তোলা হয় বলে একে লেজার প্রিন্টার বলে। এটি একটি ইলেকট্রোস্ট্যাটিক প্রিন্টার। লেজার রশ্মির প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে প্রতি একক সময়ে একসাথে একটি পৃষ্ঠা প্রিন্ট করে। উচ্চগতি, সর্বাধুনিক, সুন্দরতম ও নির্ভরশীল হওয়ায় লেজার প্রিন্টারের ব্যবহার অনেক বেশি। কৌশলগত দিক থেকে এটি অনেকাংশে ফটোকপিয়ারের (Photocopier) মতো। একটি লেজার প্রিন্টারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আলোক সক্রিয় ( Photosensitive) ড্রাম। এই ড্রামের গায়ে সেলেনিয়াম জাতীয় পদার্থের আবরণ থাকে যা আলোক সক্রিয় করে। লেজার প্রিন্টারের মুদ্রণ মান অত্যন্ত মসৃণ হয়ে থাকে। এছাড়া এর মুদ্রণ গতিও বেশ দ্রুত। তবে পৃষ্ঠা প্রতি এর খরচ অপেক্ষাকৃত বেশি। সাধারণত ট্রেসিং পেপারে মিরর ইমেজে ডকুমেন্ট ছাপানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। বেশ কয়েকটি কোম্পানি লেজার প্রিন্টার তৈরি করে। যেমন-ক্যানন (Cannon), এইচপি লেজার জেট (HP Laser jet), অ্যাপেল রাইটার (Apple Writer) ইত্যাদি। এই প্রিন্টারের কালির নাম টোনার কার্টিজ। লেজার প্রিন্টার দিয়ে মিনিটে ৪ থেকে ২০ পৃষ্ঠার অধিক ছাপানো সম্ভব। সাধারণ ছাপার তুলনায় ৫০ গুণ দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে থাকে। 600 DPI প্রিন্টারের তুলনায় 1200 DPI প্রিন্টারের মুদ্রণ মান ভালো। DPI যত বেশি হবে ছাপার মানও তত বেশি উন্নত হবে। DPI এর পূর্ণ নাম হচ্ছে Dot Per Inch

লেজার প্রিন্টারের বৈশিষ্ট্য

১. প্রিন্টিং কোয়ালিটি খুবই উন্নতমানের।

২. প্রিন্টিং এর সময় কোনো শব্দ হয় না।

৩. প্রতি মিনিটে ৪-২০ তার বেশি পৃষ্ঠা প্রিন্ট হয়।

৪. প্রিন্টিং রেজুলেশন ৩০০-১২০০ বা তারও অধিক।

৫. মাল্টিপল বা অধিক কপি প্রিন্ট করা যায়।

৬. প্রিন্টিং কন্ট্রোল ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করা যায়।

৭. টোনার রিফিল করা যায়।

৮. ডেস্কটপ পাবলিশিং এর কাজে লেজার প্রিন্টার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

বিভিন্ন ধরনের প্রিন্টারের তুলনামূলক ব্যবহারিক সুবিধা-অসুবিধা

বহুল ব্যবহৃত প্রিন্টারসমূহ হলো ডট মেট্রিক্স প্রিন্টার, ইঙ্কজেট প্রিন্টার এবং লেজার প্রিন্টার। নিম্নে তাদের সুবিধা ও অসুবিধা দেওয়া হলো-

■ ডট মেট্রিক্স প্রিন্টার

ডট মেট্রিক্স প্রিন্টার ছোট পিন ব্যবহার করে প্রিন্ট করে। যদিও এই প্রযুক্তিটি পুরানো তবুও ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টারগুলো আজও বহুল ব্যবহৃত। যেহেতু অপারেশনের একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে তাদের অনেক সুবিধা রয়েছে। ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টারের সুবিধা ও অসুবিধা নিম্নরূপ—

ডট মেট্রিক্স প্রিন্টারের প্রধান সুবিধা-

• সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হলো ব্যয় কম। এই সরঞ্জামগুলোর দাম ইঙ্কজেট বা লেজার প্রিন্টারগুলোর বিপরীতে দশগুণ কম ।

• অপারেটিং সময় অন্যান্য প্রিন্টারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। রং কালি ফিতাটি হঠাৎ শুকিয়ে যায় না, এটি সর্বদা আগাম দেখা যায়, কারণ মুদ্রিত পাঠ্যের মানটি কিছুটা বিবর্ণ হতে শুরু করে। কার্টিজ চার্জ করার সময় না থাকলে অন্য ধরনের ডিভাইসগুলো গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

• যে কোনো প্রকার কাগজে প্রিন্ট করা যায়।

• ডিভাইসটি কার্বন অনুলিপি প্রিন্টিং সরবরাহ করে, যা একই ধরনের পাঠ্যের দ্রুত নকল করতে দেয়।

 ডট মেট্রিক্স প্রিন্টারের প্রধান অসুবিধা

• এই সরঞ্জামগুলো ফটো প্রিন্ট করতে পারে না।

• প্রিন্ট কোয়ালিটি তেমন ভালো নয় ।

• তুলনামূলকভাবে গতি কম ।

• প্রিন্ট করার সময় উচ্চ শব্দ হয়।

ইঙ্কজেট প্রিন্টার

ইঙ্কজেট প্রিন্টার কাগজের উপর ইঙ্কনোজল দিয়ে তরল কালি স্প্রে এর মাধ্যমে প্রিন্ট করে। এই প্রিন্টারের সুবিধা ও অসুবিধা নিম্নরূপ-

▪️ইস্কজেট প্রিন্টারের সুবিধাসমূহ-

• কম খরচে রঙিন চিত্র এবং ফটোগ্রাফ প্রিন্ট করার ক্ষমতা আছে। রং-কে লেজার মডেলের চেয়ে আরও ভালভাবে মিশ্রিত করে।

• চকচকে এবং এমনকি কিছু ধরনের কাপড়সহ বিভিন্ন পৃষ্ঠের মুদ্রণ নেওয়া যায়।

• কাজ শুরু করার আগে গরম করার দরকার নেই।

• কার্টিজগুলো রিফিল করা যায় ফলে খরচ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমানো সম্ভব।

• ব্যবহার সহজ, ছোট আকার এবং ওজন কম ।

ইস্কজেট প্রিন্টারের অসুবিধাসমূহ-

• কালি ব্যয়বহুল ।

• কালি তরল থাকে ফলে প্রিন্ট করার পর কাগজের উপর পানি পড়লে তা নষ্ট হয়ে যায়।

কাজের গতি কম।

• প্রিন্টিং হেড ঘন ঘন পরিষ্কার করা প্রয়োজন ।

• দীর্ঘসময় ব্যবহার না করলে কালি শুকিয়ে প্রিন্টিং হেড ব্লক হয়ে যায় ফলে আর প্রিন্ট হয় না।

Content added || updated By

স্পেশাল পেরিফেরাল ডিভাইস-এর ফিচারসমূহ

স্ক্যানার (Scanner )

প্রকাশনা জগতে এটি একটি অত্যাবশ্যকীয় জনপ্রিয় ইনপুট ডিভাইস। এটির মাধ্যমে ক্যামেরায় তোলা ছবি, রেখা, লেখা ইত্যাদি হুবহু কম্পিউটারে নেওয়া যায়। স্ক্যানারের সাহায্যে কম্পিউটারে নেয়া ছবি, রেখা, লেখা ইত্যাদি ইচ্ছেমতো সম্পাদনা করে যেকোনো প্রোগ্রামের বিষয়বস্তুর মধ্যে বসিয়ে প্রিন্ট করা যায়। লেখাকে স্ক্যান করে কম্পিউটারে দ্রুত ঢুকানো যায়।

চিত্র: স্ক্যানার

কী-বোর্ড থেকে কম্পোজ করতে বেশ সময় লাগে। ডকুমেন্টসমূহকে তাড়াতাড়ি পাওয়ার জন্য স্ক্যান করে কম্পিউটারে ঢুকিয়ে রাখা যেতে পারে। অধিকাংশ স্ক্যানারের Optical Character Recognition (Reader) (OCR) সফটওয়্যারও আছে। যার মাধ্যমে স্ক্যান করা টেক্সট চিত্রকে ডুকমেন্ট টেক্সটে রূপান্তর করা যায়। পরবর্তীতে ওয়ার্ড প্রসেসরে সম্পাদনা করা যায়। স্ক্যানার কোনো ছবি বা টেক্সটকে ইলেকট্রনিক সিগন্যালে রূপান্তর (Convert) করে, গ্রাফিক্স সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইমেজ-এ রূপান্তরিত হয়।

স্ক্যানারের প্রকারভেদ : স্ক্যানার সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে। যথা—

১. ফ্লাটবেড স্ক্যানার (Flatbed Scanner) বা অপটিক্যাল স্ক্যানার

২. ড্রাম স্ক্যানার (Drum Scanner )

৩. হ্যান্ড হেল্ড স্ক্যানার (Hand Held Scanner )

কার্যপ্রণালী

সাধারণত ক্যামেরায় তোলা কাগজে মুদ্রিত ছবি স্ক্যানারের সাহায্যে কম্পিউটারে প্রেরণ করা যায়। স্ক্যানারের সাহায্যে কম্পিউটারে ছবি গ্রহণ এবং কম্পিউটারে ছবি সম্পাদনার জন্য প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অপটিক্যাল স্ক্যানার আলোক রশ্মি এবং আলোক সংবেদনশীল যন্ত্রের সাহায্যে Photo Impact তৈরি করে। অপটিক্যাল স্ক্যানারগুলো ভিন্ন ভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। যেমন- কম্পিউটারে ইনপুট ওসিআর (O.C.R) এবং ওএমআর (O.M.R) ইত্যাদি।

ফ্ল্যাটবেড অপটিক্যাল স্ক্যানার (Flatbed Optical Scanner )

এ স্ক্যানারে দেখতে অনেকটা ফটোকপি মেশিনের মতো। এটি ফটোকপি মেশিনের মতো কাজ করে। কম্পিউটারে ছবি প্রেরণের জন্য এই স্ক্যানার ব্যবহৃত হয়। এই স্ক্যানারে কাঁচ জাতীয় এক ধরনের সমতল স্বচ্ছ প্লেট ব্যবহার করা হয়। যে ছবিকে স্ক্যান করতে হবে তা এই প্লেটের উপর স্থাপন করা হয়। স্ক্যানিংয়ের কাজ শুরু করলে স্ক্যানার হেড সমতল স্বচ্ছ প্লেটের উপর রক্ষিত ছবির নিচ দিয়ে সঞ্চালিত হয়। এর আলোক উৎস থেকে তীব্র আলো ছবির উপর পতিত হয়। তারপর ছবি থেকে প্রতিফলিত আলোক রিডার হেড দ্বারা গৃহিত হয়। পরে এই স্ক্যানারের সহযোগী সফটওয়্যার ছবিকে ডিসপ্লে ইউনিটের স্ক্রিণে ফুটিয়ে তোলে ।

ড্রাম স্ক্যানার (Drum Scanner )

ড্রাম স্ক্যানারের দাম বেশি এবং আকৃতিতেও বেশ বড়। উন্নত মানের ছবির জন্য এই ধরনের স্ক্যানার ব্যবহার করা হয়। মুদ্রণের কাজে ড্রাম স্ক্যানার ব্যবহার করা হয়।

হ্যান্ড হেল্ড স্ক্যানার (Hand Held Scanner )

এটি আকৃতিতে ছোট। এ ধরনের স্ক্যানারে এক প্রকার হস্তচালিত স্ক্যান হেড ব্যবহার করা হয়। এই স্ক্যান

হেডকে হাতে ধরে ছবি বা লেখার উপর দিয়ে চালনা করা হয়। অফিস-আদালতে বিশেষ কাজের জন্য এ ধরনের স্ক্যানার ব্যবহৃত হয়।

অপটিক্যাল মার্ক রিডার (Optical Mark Reader- OMR)

অপটিক্যাল মার্ক রিডার (Optical Mark Reader) এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ও.এম.আর (OMR)। OMR দেখতে ফটোকপি মেশিনের মতো। OMR-এ ব্যবহৃত কাগজ সাধারণ কাগজ নয়, তাই এটি খুব দামী। OMR কালির বা পেন্সিলের দাগ বোঝতে পারে। বিশেষ ব্যবস্থার সাহায্যে দাগগুলো তড়িৎ প্রবাহের পরিবর্তন ঘটায়। তখন কম্পিউটার দাগের অস্তিত্ব বুঝতে পারে। কালির দাগের আলোর প্রতিফলনের ধরন অনুযায়ী কালির দাগ বোঝা যায় ।

পেন্সিলের দাগ বুঝে পেন্সিলের সীসে ব্যবহৃত গ্রাফাইটের বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা বিচার করে। কম্পিউটারের সঙ্গে OMR ব্যবহার করে বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তরের ফলাফল বের করা যায়। আমাদের দেশে বর্তমানে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রী পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর নাম, ঠিকানা, রোল নম্বর ইত্যাদি বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষার জন্য উত্তর পত্রের সংশ্লিষ্ট অংশ নির্দিষ্ট ছকের ক্ষেত্রে গোল চিহ্ন পূরণ করতে হয়। পরে ঐ অংশ OMR পদ্ধতিতে পাঠ ও ব্যবহার করা হয়। OMR (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) পূরণ করা চিহ্নের সংকেত কম্পিউটারে ইনপুট হিসাবে প্রেরণ করে। মার্ক রিডার আলোর প্রতিফলনের সাহায্যে চিহ্ন পাঠ করে। যে ঘরের চিহ্ন পূরণ করা হয় সেই ঘরে আলোর প্রতিফলন ঘটে না, যে ঘরের চিহ্ন পূরণ করা হয় না সেই ঘরের আলো প্রতিফলিত হয়। কম্পিউটার সেই সকল দাগের অস্তিত্ব বুঝতে পেরে কম্পিউটার মেমোরিতে রক্ষিত জানা উত্তরের সাথে তুলনা করে সঠিক উত্তর নির্ণয় করে। নির্ভুলতা, দ্রুততা, গোপনীতা সর্বোপরী মানবীয় ভুলের পুনরাবৃত্তি হওয়ার কোন সুযোগ থাকে না।

ওএমআর-এর প্রধান সুবিধা হচ্ছে এটির সাহায্যে উত্তরপত্র বা কোন ডকুমেন্ট পরীক্ষা করলে ভুল বা পক্ষপাতিত্বর সম্ভাবনা থাকে না। অনেক সুবিধা থাকলেও এর কিছু কিছু অসুবিধা রয়েছে। যেমন— সাধারণ মানের কাগজের পরিবর্তে ওএমআর ডিভাইসে বিশেষ ধরনের কাগজ ব্যবহার করা হয়। আবার ভুলক্রমে যদি সঠিক চিহ্নের পরিবর্তে ভুল চিহ্নটি করা হয়, তবে পরবর্তীতে তা সঠিক করার কোন উপায় থাকে না (ব্যতিক্রম পেন্সিলের দাগের ক্ষেত্রে)।

অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিডার বা ওসিআর (Optical Character Reader-OCR)

যে যন্ত্রের সাহায্যে কম্পিউটার সাধারণ কাগজে সাধারণ কালিতে ছাপা বর্ণ বা অক্ষর পড়তে পারে তাকে ও.সি.আর (OCR) বলে । 

অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিডার (Optical Character Reader) এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে-OCR। এক সময়ে ও.সি.আর নামে একটি ইনপুট যন্ত্র কম্পিউটারের সাথে ব্যবহৃত হতো। OCR এর সাহায্যে কম্পিউটার সাধারণ কাগজে সাধারণ কালিতে ছাপা বর্ণ বা অক্ষর পড়তে পারে। বর্ণের গঠন অনুযায়ী OCR বৈদ্যুতিক সংকেত সৃষ্টি করে ঐ বর্ণ পড়তে পারে। পূর্ব থেকেই বিভিন্ন বর্ণের বৈদ্যুতিক সংকেত OCR এ রাখা হয়। তারপর OCR সেই বর্ণের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে যে কোন বর্ণ পড়া হচ্ছে। এরপরে ঐ বর্ণ কম্পিউটারে জমা রাখে। বীমার নোটিশ, বৈদ্যুতিক বিল ইত্যাদি পড়ার জন্য OCR ব্যবহৃত হয়। স্পষ্ট হাতের লেখাও OCR পড়তে পারে। ক্যারেক্টার রিডার প্রথমে লেখাকে স্ক্যান করে নেয়। পরবর্তী স্ক্যানকৃত লেখার উপর আলোর প্রতিফলন ঘটায়। এই প্রতিফলিত আলো ফটো ইলেকট্রিক ডিভাইসের মাধ্যমে ইলেকট্রিক সংকেতে ঐ প্যাটার্নের সাথে লজিক সার্কিট থেকে প্রেরিত সংকেতের প্যাটার্ন মিলিয়ে দেখা হয়। সম্ভাব্য মিলে যাওয়া প্যাটার্নগুলো পরবর্তীতে বর্ণ হয়ে সিপিইউতে যায়। যদিও হাতের লেখা পড়ার জন্য হ্যান্ড রাইটিং রিকগনিশন নামে এক ধরনের বিশেষ ডিভাইস রয়েছে। বর্তমানে ওসিআর ইনপুট ডিভাইস হিসেবেই ব্যবহৃত হয় না। সাধারণ মানের স্ক্যানারই এই কাজ করতে পারে। তবে এর জন্য এক ধরনের ওসিআর সফটওয়্যারের প্রয়োজন।

ম্যাগনেটিক ইন্ত ক্যারেক্টার রিডার বা এম আই সি আর (MICR )

ম্যাগনেটিক ইঙ্ক ক্যারেক্টার রিডার (Magnetic Ink Character Reader) এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে MICR । ম্যাগনেটিক ইঙ্ক হচ্ছে চৌম্বকীয় কালি। আর চৌম্বকীয় কালি দিয়ে লেখা অক্ষর পাঠ করার যন্ত্রকেই ম্যাগনেটিক ইঙ্ক ক্যারেক্টার রিডার বলে। চৌম্বকীয় কালি বলতে বিশেষ ধরনের কালি বোঝায়। এ কালিতে থাকে আয়রন অক্সাইড কণা। সাধারণত ব্যাংক চেক, জমা বই ইত্যাদিতে এ ধরনের কালি ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের কালি দিয়ে লেখা এম.আই.সি.আর পাঠ (read) করতে পারে।

এম.আই.সি.আর লিখিত অক্ষরের চৌম্বকীয় আকৃতি (Pattern) পাঠ করে। অক্ষর শনাক্ত করার জন্য কম্পিউটারের মেমোরিতে সংরক্ষিত বিশেষ আকৃতির সঙ্গে পঠিত আকৃতির তুলনা করে মিলিয়ে দেখে । গ্রাহককে চেক বই প্রদানের সময় চেক বইয়ের নিচের দিকে ব্যাংকের শনাক্তকরণ সংখ্যা (Identification Number) এবং গ্রাহকের হিসাব নম্বর চৌম্বকীয় কালি দিয়ে মুদ্রিত করে দেওয়া হয়। গ্রাহক যখন টাকা তোলার জন্য চেক বই জমা দেন তখন ব্যাংক কর্মচারী চেকের নিচের দিকে একই কালি দিয়ে টাকার পরিমাণ লিখে দেন। চেকটি এম.আই.সি.আর-এ প্রবেশ করানোর পর তা চৌম্বকীয় ক্ষেত্রে (Magnetic field) ভেতর দিয়ে চলে যায়। চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের ভেতরে আয়রন অক্সাইড কণা চৌম্বকত্ব প্রাপ্ত হয়। তখন রিড হেড (Read head) চৌম্বকীয় কালি দিয়ে লেখা অক্ষর পাঠ করে। তারপর রূপান্তরিত ভাষান্তর করে সংশ্লিষ্ট ডেটা বা তথ্য সরাসরি কম্পিউটারের প্রসেসরে প্রেরণ করে। এম.আই.সি.আর প্রতি মিনিটে আড়াই হাজারের বেশি চেক পাঠ করে কম্পিউটারের প্রসেসরে প্রেরণ করতে পারে।

এম আই সি আর ব্যবহারের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে

• চেকটি কোন কারণে নষ্ট হলেও রিডারের পড়ার সর্বোচ্চ ক্ষমতা এবং সূক্ষ্মতা থাকে।

• প্রক্রিয়াকরণ দ্রুতগতিতে হয়।

• অনেক সময় হাতের লেখা না বোঝতে পারলেও এমআইসিআর এ ব্যবহৃত লেখা সহজেই পড়া যায়।

• এই পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকে।

এত বেশি সুবিধা থাকলেও এমআইসিআর (MICR) ব্যবহারে কিছু কিছু বিষয়ে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন ব্যাংকের প্রসেসিং এর জন্য চেকে ১০টি ডিজিট এবং ৪টি বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কোন প্রকার বর্ণ ব্যবহার করা যায় না।

অসুবিধা

• এটির জন্য প্রিন্টিং এর গুণগত মান উন্নত হতে হয়, যা ব্যয় বহুল।

• এটির ব্যবহার শুধুমাত্র বিশেষ ধরনের প্রিন্টের ও হাতের লেখা পড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ।

• এটির ক্যারেক্টারগুলো ১০ ডিজিট ও ৪টা বিশেষ ক্যারেক্টারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।

ডিজিটাইজার (Digitizer)

কম্পিউটারের গ্রহণ মুখ যন্ত্রাংশ প্লেটের আকৃতি বিশিষ্ট যন্ত্রের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের ছবি অঙ্কন করা যায়। এই যন্ত্র দিয়ে কম্পিউটারের পর্দায় ছবি আঁকা হয়ে যায়। এখানে একটি আয়তাকার চ্যাপ্টা ব্লক (Block) থাকে যাকে বলে ডিজিটাইজার বোর্ড (Board) বা ডিজিটাইজিং টেবিল (Digitizing Table) বা গ্রাফিক টেবিল (Grapic Table)। এটি বিভিন্ন আকারের হতে পারে। বোর্ডের ভিতরে উপযুক্ত বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা থাকে।

একটি স্টাইলাসের (Stylus কলমের মতো) সাহায্যে বোর্ডে যা কিছু লেখা বা আঁকা যায় তাই মনিটরের পর্দায় ভেসে ওঠে। একই সংগে বিভিন্ন সময়ে স্টাইলাসের অবস্থানের x ও y স্থানাঙ্ক কম্পিউটার মেমোরিতে চলে যায়। কাগজে কোনো গ্রাফ ছবি এঁকে তা ডিজিটাইজার বোর্ডে রেখে সেই গ্রাফ বা ছবির উপর স্টাইলাস থাকলে, VDU (Visual Display Unit) এর পর্দায় দেখানো যায়। তার স্থানাঙ্ক কম্পিউটারে ইনপুট করা যায়। এভাবে ডিজিটাইজারের সাহায্যে বিভিন্ন গ্রাফ, ম্যাপ, বাড়ি ইত্যাদি প্ল্যান সহজেই কম্পিউটারে ইনপুট করা যায়।

 লাইটপেন (Light Pen )

কম প্রচলিত একটি ইনপুট ডিভাইস হচ্ছে লাইটপেন। এটিকে ইলেকট্রনিক কলমও বলা যেতে পারে। এটি একটি আলোক সংবেদনশীল কলম। এই ধরনের ডিভাইস সাধারণত অফিসিয়াল কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। লাইটপেন এক ধরনের ইলেকট্রনিক কলম বিশেষ যার এক প্রান্ত একটি তারের মাধ্যমে সিস্টেম ইউনিটের সাথে সংযুক্ত থাকে। এই ডিভাইস দ্বারা যখন মনিটরের পর্দায় কোনো কিছু আঁকা হয় তখন সেই অংকনটি সরাসরি সিপিইউতে যায়। লাইটপেন দেখতে অনেকটা কলমের মতো মনে হলেও এর সামনে এক ধরনের ফটোসেল থাকে । যখন ব্যবহারকারী সেই ডিভাইস দ্বারা মনিটর পর্দায় কিছু আঁকে তখন মনিটর থেকে বের হয়ে আসা আলো ফটোসেলে আঘাত করে। আলোর উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে এক ধরনের বৈদ্যুতিক সংকেত সিস্টেমে পাঠায়। স্থাপত্য ড্রয়িং, প্রকৌশল ড্রয়িং এবং বিভিন্ন ধরনের নকশার ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।

স্পীচ রিকগনাইজার ( Speech Ricognizer)

মুখে বলা শব্দকে কোনো কম্পিউটার প্রোগ্রামে ইনপুট হিসেবে গ্রহণের প্রক্রিয়া হলো ভয়েস রিকগনিশন। ভার্চুয়াল রিলেলিটির জন্য এই প্রক্রিয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি অতি সুন্দর প্রাকৃতিক ও স্বজ্ঞাত উপায়ে সিমুলেশনকে নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধা দেয়। আর যে ইলেকট্রনিক যন্ত্র মানুষের কন্ঠস্বরকে সরাসরি রূপান্তর করে কম্পিউটারে এন্ট্রি করার উপযোগী করে তোলে তাকে বলা হয় ভয়েস রিকগনাইজার।

Content added || updated By
Promotion